Bible Language

Matthew 22:29 (BNV) Bengali Old BSI Version

1 যীশু আবার দৃষ্টান্ত দ্বারা কথা কহিলেন, তিনি তাহাদিগকে বলিলেন,
2 স্বর্গ-রাজ্য এমন এক জন রাজার তুল্য, যিনি আপন পুত্রের বিবাহভোজের আয়োজন করিলেন।
3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদিগকে ডাকিবার জন্য তিনি আপন দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন; কিন্তু তাহারা আসিতে চাহিল না।
4 তাহাতে তিনি আবার অন্য দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন, বলিলেন, নিমন্ত্রিত লোকদিগকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করিয়াছি, আমার বৃষাদি হৃষ্টপুষ্ট পশু সকল মারা হইয়াছে, সকলই প্রস্তুত; তোমরা বিবাহের ভোজে আইস।
5 কিন্তু তাহারা অবহেলা করিয়া কেহ আপন ক্ষেত্রে, কেহ বা আপন ব্যাপারে চলিয়া গেল।
6 অবশিষ্ট সকলে তাঁহার দাসদিগকে ধরিয়া অপমার করিল বধ করিল।
7 তাহাতে রাজা ক্রুদ্ধ হইলেন, এবং সৈন্যসামন্ত পাঠাইয়া সেই হত্যাকারীদিগকে বিনষ্ট করিলেন, তাহাদের নগর পোড়াইয়া দিলেন।
8 পরে তিনি আপন দাসদিগকে কহিলেন, বিবাহের ভোজ প্রস্তুত, কিন্তু নিমন্ত্রিত লোকেরা যোগ্য ছিল না;
9 অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়া যত লোকের দেখা পাও, সকলকে বিবাহের ভোজে ডাকিয়া আন।
10 তাহাতে দাসেরা রাজপথে গিয়া ভাল মন্দ যত লোকের দেখা পাইল, সকলকেই সংগ্রহ করিয়া আনিল, তাহাতে বিবাহবাটী অতিথিগণে পরিপূর্ণ হইল।
11 পরে রাজা অতিথিদিগকে দেখিবার জন্যে ভিতরে আসিয়া এমন এক ব্যক্তিকে দেখিতে পাইলেন, যাহার বিবাহবস্ত্র ছিল না;
12 তিনি তাহাকে কহিলেন, হে বন্ধু, তুমি কেমন করিয়া বিবাহ-বস্ত্র বিনা এখানে প্রবেশ করিলে? সে নিরুত্তর হইল।
13 তখন রাজা পরিচারকদিগকে কহিলেন, উহার হাত পা বাঁধিয়া উহাকে বাহিরের অন্ধকারে ফেলিয়া দেও; সেখানে রোদন দন্তঘর্ষণ হইবে।
14 বাস্তবিক অনেকে আহূত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।
15 তখন ফরীশীরা গিয়া মন্ত্রণা করিল, কিরূপে তাঁহাকে কথার ফাঁদে ফেলিতে পারে।
16 আর তাহারা হেরোদীয়দের সহিত আপনাদের শিষ্যগণকে দিয়া তাঁহাকে বলিয়া পাঠাইল, গুরো, আমরা জানি, আপনি সত্য, এবং সত্যরূপে ঈশ্বরের পথের বিষয় শিক্ষা দিতেছেন, এবং আপনি কাহারও বিষয়ে ভীত নহেন, কেননা আপনি মনুষ্যের মুখাপেক্ষা করেন না।
17 ভাল, আমাদিগকে বলুন, আপনার মত কি কৈসরকে কর দেওয়া বিধেয় কি না?
18 কিন্তু যীশু তাহাদের দুষ্টামি বুঝিয়া কহিলেন, কপটীরা, আমার পরীক্ষা কেন করিতেছ?
19 সেই করের মুদ্রা আমাকে দেখাও। তখন তাহারা তাঁহার নিকটে একটী দীনার আনিল।
20 তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, এই মূর্ত্তি এই নাম কাহার? তাহারা বলিল, কৈসরের।
21 তখন তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তবে কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরকে দেও, আর ঈশ্বরের যাহা যাহা, ঈশ্বরকে দেও।
22 এই কথা শুনিয়া তাহারা আশ্চর্য্য জ্ঞান করিল, এবং তাঁহাকে ছাড়িয়া চলিয়া গেল।
23 সেই দিন সদ্দূকীরা—যাহারা বলে পুনরুত্থান নাই—তাঁহার কাছে আসিল;
24 এবং তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল, গুরো, মোশি বলিয়াছেন, কেহ যদি নিঃসন্তান হইয়া মরে, তবে তাহার ভাই তাহার স্ত্রীকে বিবাহ করিয়া আপন ভাইয়ের জন্য বংশ উৎপন্ন করিবে।
25 ভাল, আমাদের মধ্যে সাতটী ভাই ছিল; আর জ্যেষ্ঠ বিবাহের পর মরিয়া গেল, এবং সন্তান না হওয়াতে আপন ভ্রাতার জন্য নিজ স্ত্রীকে রাখিয়া গেল।
26 দ্বিতীয় তৃতীয় প্রভৃতি সপ্তম জন পর্য্যন্ত সেইরূপ করিল।
27 সকলের শেষে সে স্ত্রীও মরিয়া গেল।
28 অতএব পুনরুত্থানে সাত জনের মধ্যে সে কাহার স্ত্রী হইবে? সকলেই তাহাকে বিবাহ করিয়াছিল।
29 যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা ভ্রান্ত হইতেছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম;
30 কেননা পুনরুত্থানে লোকে বিবাহ করে না, এবং বিবাহিতাও হয় না, বরং স্বর্গে ঈশ্বরের দূতগণের ন্যায় থাকে।
31 কিন্তু মৃতদের পুনরুত্থান বিষয়ে ঈশ্বর তোমাদিগকে যাহা বলিয়াছেন, তাহা কি তোমরা পাঠ কর নাই?
32 তিনি বলেন, “আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর, যাকোবের ঈশ্বর;” ঈশ্বর মৃতদের ঈশ্বর নহেন, কিন্তু জীবিতদের।
33 এই কথা শুনিয়া লোকসমূহ তাঁহার শিক্ষাতে চমৎকার জ্ঞান করিল।
34 ফরীশীরা যখন শুনিতে পাইল, তিনি সদ্দূকীদিগকে নিরুত্তর করিয়াছেন, তখন তাহারা একসঙ্গে আসিয়া যুটিল।
35 আর তাহাদের মধ্যে এক ব্যক্তি, এক জন ব্যবস্থাবেত্তা, পরীক্ষা ভাবে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল,
36 গুরো, ব্যবস্থার মধ্যে কোন্‌ আজ্ঞা মহৎ?
37 তিনি তাহাকে কহিলেন, “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে,”
38 এইটী মহৎ প্রথম আজ্ঞা।
39 আর দ্বিতীয়টী ইহার তুল্য; “তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।”
40 এই দুইটী আজ্ঞাতেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদিগ্রন্থও ঝুলিতেছে।
41 আর ফরীশীরা একত্র হইলে যীশু তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন,
42 খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কেমন বোধ হয়, তিনি কাহার সন্তান? তাহারা বলিল, দায়ূদের।
43 তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তবে দায়ূদ কি প্রকারে আত্মার আবেশে তাঁহাকে প্রভু বলেন? তিনি বলেন,—
44 “প্রভু আমার প্রভুকে কহিলেন, তুমি আমার দক্ষিণে বস, যাবৎ আমি তোমার শত্রুগণকে তোমার পদতলে না রাখি।”
45 অতএব দায়ূদ যখন তাঁহাকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কি প্রকারে তাঁহার সন্তান?
46 তখন কেহ তাঁহাকে কোন উত্তর দিতে পারিল না; আর সেই দিন অবধি তাঁহাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিতে কাহারও সাহস হইল না।