Bible Language

Isaiah 42 (BNV) Bengali Old BSI Version

1 দেখ, আমার দাস, আমি তাঁহাকে ধারণ করি; তিনি আমার মনোনীত, আমার প্রাণ তাঁহাতে প্রীত; আমি তাঁহার উপরে আপন আত্মাকে স্থাপন করিলাম; তিনি জাতিগণের কাছে ন্যায়বিচার উপস্থিত করিবেন।
2 তিনি চিৎকার করিবেন না, উচ্চশব্দ করিবেন না, পথে আপন রব শুনাইবেন না।
3 তিনি থেৎলা নল ভাঙ্গিবেন না; সধূম শলিতা নির্ব্বাণ করিবেন না; সত্যে তিনি ন্যায়বিচার প্রচলিত করিবেন।
4 তিনি নিস্তেজ হইবেন না, নিরুৎসাহ হইবেন না, যে পর্য্যন্ত না পৃথিবীতে ন্যায়বিচার স্থাপন করেন; আর উপকূলসমূহ তাঁহার ব্যবস্থার অপেক্ষায় থাকিবে।
5 সদাপ্রভু ঈশ্বর, যিনি আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করিয়াছেন তাহা বিস্তার করিয়াছেন, যিনি ভূতল তদুৎপন্ন সমস্তই বিছাইয়াছেন, যিনি তন্নিবাসী সকলকে নিঃশ্বাস দেন, তথাকার সমস্ত জঙ্গমকে জীবাত্মা দেন, তিনি এই কথা কহেন,
6 আমি সদাপ্রভু ধর্ম্মশীলতায় তোমাকে আহ্বান করিয়াছি, আর আমি তোমার হস্ত ধরিব, তোমাকে রক্ষা করিব; এবং তোমাকে প্রজাগণের নিয়মস্বরূপ জাতিগণের দীপ্তিস্বরূপ করিয়া নিযুক্ত করিব;
7 তুমি অন্ধদিগকে চক্ষু দিবে, তুমি কারাকূপ হইতে বন্দিদিগকে কারাগার হইতে অন্ধকারবাসিগণকে বাহির করিয়া আনিবে।
8 আমি সদাপ্রভু, ইহাই আমার নাম; আমি আপন গৌরব অন্যকে, কিম্বা আপন প্রশংসা ক্ষোদিত প্রতিমাগণকে দিব না।
9 দেখ, পূর্ব্বকার বিষয় সকল সিদ্ধ হইল; আর আমি নূতন নূতন ঘটনা জ্ঞাত করি, অঙ্কুরিত হইবার পূর্ব্বে তোমাদিগকে তাহা জানাই।
10 হে সমুদ্রগামীরা, সাগরস্থ সকলে, হে উপকূলসমূহ তন্নিবাসীরা, তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশে নূতন গীত গাহ, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে তাঁহার প্রশংসা গাহ।
11 প্রান্তর তথাকার নগর সকল উচ্চৈঃস্বর করুক, কেদরের বসতি গ্রাম সকল তাহা করুক, শেলা-নিবাসীরা আনন্দ-রব করুক, পর্ব্বতগণের চূড়া হইতে মহানাদ করুক;
12 তাহারা সদাপ্রভুর গৌরব স্বীকার করুক, উপকূল সমূহের মধ্যে তাঁহার প্রশংসা প্রচার করুক।
13 সদাপ্রভুর বীরের ন্যায় যাত্রা করিবেন, যোদ্ধার ন্যায় উদ্যোগ উত্তেজিত করিবেন; তিনি জয়ধ্বনি করিবেন, হাঁ, মহানাদ করিবেন; তিনি শত্রুদের বিপরীতে পরাক্রম দেখাইবেন;
14 আমি অনেক দিন চূপ করিয়া আছি, নীরব আছি, ক্ষান্ত রহিয়াছি; এখন প্রসবকারিণী স্ত্রীর ন্যায় কোঁকাইয়া উঠিব; আমি এককালে নিঃশ্বাস টানিয়া ফুৎকার করিব।
15 আমি পর্ব্বত উপপর্ব্বতগণকে ধ্বংস করিব, তদুপরিস্থ সমস্ত তৃণ শুষ্ক করিব, এবং নদনদীকে উপকূল, জলাশয় সকল শুষ্ক করিব।
16 আমি অন্ধদিগকে তাহাদের অবিদিত পথ দিয়া লইয়া যাইব; যে সকল মার্গ তাহারা জানে না, সেই সকল মার্গ দিয়া তাহাদিগকে চালাইব; আমি তাহাদের অগ্রে অন্ধকারকে আলোক, বক্রভূমিকে সরল করিব; এই সমস্ত আমি করিব, তাহাদিগকে পরিত্যাগ করিব না।
17 যাহারা ক্ষোদিত প্রতিমাদিগেতে নির্ভর করে, যাহারা ছাঁচে ঢালা প্রতিমাদিগকে বলে, তোমরা আমাদের দেবতা, তাহাদিগকে ফিরাইয়া দেওয়া যাইবে, তাহারা নিতান্ত লজ্জিত হইবে।
18 হে বধিরগণ, শুন; হে অন্ধ সকল, দেখিবার জন্য চক্ষু মেল।
19 আমার দাস বই আর অন্ধ কে? আমার প্রেরিত দূতের ন্যায় বধির কে? আমার মিত্রের ন্যায় অন্ধ কে? সদাপ্রভুর দাসের ন্যায় অন্ধ কে?
20 তুমি অনেক বিষয় দেখিতেছ, কিন্তু মন দিতেছ না; তাহার কর্ণ খোলা রহিয়াছে, কিন্তু সে শুনে না।
21 সদাপ্রভু আপন ধর্ম্মশীলতার অনুরোধে ব্যবস্থাকে মহৎ সমাদরণীয় করিতে প্রীত হইলেন।
22 তথাপি তাহারা হৃতধন লুটিত জাতি; তাহারা সকলে গর্ত্তে পাশবদ্ধ কারাগারে লুক্কায়িত হইয়াছে; তাহারা হৃতধন হইয়াছে, উদ্ধারকর্ত্তা কেহ নাই; লুটিত হইয়াছে, কেহ বলে না, ফিরাইয়া দেও।
23 তোমাদের মধ্যে কে ইহাতে কর্ণপাত করিবে? কে অবধান করিয়া ভাবিকালের নিমিত্ত তাহা শুনিয়া রাখিবে?
24 কে যাকোবকে লুটিত হইতে দিয়াছে, ইস্রায়েলকে অপহারকদের হস্তে দিয়াছে? সেই সদাপ্রভু কি নয় যাঁহার বিরুদ্ধে আমরা পাপ করিয়াছি, যাঁহার পথে লোকেরা গমন করিতে অসম্মত ছিল, তাঁহার ব্যবস্থা মানিত না?
25 তজ্জন্য তিনি তাহার উপরে আপন ক্রোধের তাপ যুদ্ধের প্রচণ্ডতা ঢালিয়া দিলেন; তাহাতে তাহার চারিদিকে অগ্নি জ্বলিয়া উঠিল, কিন্তু সে জানিল না; অগ্নি তাহার দাহ জন্মাইল, তথাপি সে মনোযোগ করিল না।