Bible Language

John 1 (BNV) Bengali Old BSI Version

1 আদিতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের কাছে ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন।
2 তিনি আদিতে ঈশ্বরের কাছে ছিলেন।
3 সকলই তাঁহার দ্বারা হইয়াছিল, যাহা হইয়াছে, তাহার কিছুই তাঁহা ব্যতিরেকে হয় নাই।
4 তাঁহার মধ্যে জীবন ছিল, এবং সেই জীবন মনুষ্যগণের জ্যোতি ছিল।
5 আর সেই জ্যোতি অন্ধকারের মধ্যে দীপ্তি দিতেছে, আর অন্ধকার তাহা গ্রহণ করিল না।
6 এক জন মনুষ্য উপস্থিত হইলেন, তিনি ঈশ্বর হইতে প্রেরিত হইয়াছিলেন, তাঁহার নাম যোহন।
7 তিনি সাক্ষ্যের জন্য আসিয়াছিলেন, যেন সেই জ্যোতির বিষয়ে সাক্ষ্য দেন, যেন সকলে তাঁহার দ্বারা বিশ্বাস করে।
8 তিনি সেই জ্যোতি ছিলেন না, কিন্তু আসিলেন, যেন সেই জ্যোতির বিষয়ে সাক্ষ্য দেন।
9 প্রকৃত জ্যোতি ছিলেন, যিনি সকল মনুষ্যকে দীপ্তি দেন, তিনি জগতে আসিতেছিলেন।
10 তিনি জগতে ছিলেন, এবং জগৎ তাঁহার দ্বারা হইয়াছিল, আর জগৎ তাঁহাকে চিনিল না।
11 তিনি নিজ অধিকারে আসিলেন, আর যাহারা তাঁহার নিজের, তাহারা তাঁহাকে গ্রহণ করিল না।
12 কিন্তু যত লোক তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন।
13 তাহারা রক্ত হইতে নয়, মাংসের ইচ্ছা হইতে নয়, মানুষের ইচ্ছা হইতেও নয়, কিন্তু ঈশ্বর হইতে জাত।
14 আর সেই বাক্য মাংসে মূর্ত্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেমন পিতা হইতে আগত একজাতের মহিমা; তিনি অনুগ্রহে সত্যে পূর্ণ।
15 যোহন তাঁহার বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন, আর উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন, ইনি সেই ব্যক্তি, যাঁহার বিষয়ে আমি বলিয়াছি, যিনি আমার পশ্চাৎ আসিতেছেন, তিনি আমার অগ্রগণ্য হইলেন, কেননা তিনি আমার পূর্ব্বে ছিলেন।
16 কারণ তাঁহার পূর্ণতা হইতে আমরা সকলে পাইয়াছি, আর অনুগ্রহের উপরে অনুগ্রহ পাইয়াছি;
17 কারণ ব্যবস্থা মোশি দ্বারা দত্ত হইয়াছিল, অনুগ্রহ সত্য যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা উপস্থিত হইয়াছে।
18 ঈশ্বরকে কেহ কখনও দেখে নাই; একজাত পুত্র, যিনি পিতার ক্রোড়ে থাকেন, তিনিই তাঁহাকে প্রকাশ করিয়াছেন।
19 আর যোহনের সাক্ষ্য এই, যখন যিহূদিগণ কয়েক জন যাজক লেবীয়কে দিয়া যিরূশালেম হইতে তাঁহার কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করিয়া পাঠাইল, ‘আপনি কে?’
20 তখন তিনি স্বীকার করিলেন, অস্বীকার করিলেন না; তিনি স্বীকার করিলেন যে, আমি সেই খ্রীষ্ট নই।
21 তাহারা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল, তবে কি? আপনি কি এলিয়? তিনি বলিলেন, আমি নই। আপনি কি সেই ভাববাদী? তিনি উত্তর করিলেন, না।
22 তখন তাহারা তাঁহাকে কহিল, আপনি কে? যাঁহারা আমাদিগকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহাদিগকে যেন উত্তর দিতে পারি। আপনার বিষয়ে আপনি কি বলেন?
23 তিনি কহিলেন, আমি “প্রান্তরে এক জনের রব, যে ঘোষণা করিতেছে, তোমরা প্রভুর পথ সরল কর,” যেমন যিশাইয় ভাববাদী বলিয়াছিলেন।
24 তাহারা ফরীশীগণের নিকট হইতে প্রেরিত হইয়াছিল।
25 আর তাহারা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিল, আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট নহেন, এলিয়ও নহেন, সেই ভাববাদীও নহেন, তবে বাপ্তাইজ করিতেছেন কেন?
26 যোহন উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, আমি জলে বাপ্তাইজ করিতেছি; তোমাদের মধ্যে এক জন দাঁড়াইয়া আছেন, যাঁহাকে তোমরা জান না,
27 যিনি আমার পশ্চাৎ আসিতেছেন; আমি তাঁহার পাদুকার বন্ধন খুলিবারও যোগ্য নহি।
28 যর্দ্দনের পরপারে, বৈথনিয়াতে, যেখানে যোহন বাপ্তাইজ করিতেছিলেন, সেইখানে এই সকল ঘটিল।
29 পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকটে আসিতে দেখিলেন, আর কহিলেন, দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।
30 উনি সেই ব্যক্তি, যাঁহার বিষয়ে আমি বলিয়াছিলাম, আমার পশ্চাৎ এমন এক ব্যক্তি আসিতেছেন, যিনি আমার অগ্রগণ্য হইলেন, কেননা তিনি আমার পূর্ব্বে ছিলেন।
31 আর আমি তাঁহাকে চিনিতাম না, কিন্তু তিনি যেন ইস্রায়েলের নিকট প্রকাশিত হন, এই জন্য আমি আসিয়া জলে বাপ্তাইজ করিতেছি।
32 আর যোহন সাক্ষ্য দিলেন, কহিলেন, আমি আত্মাকে কপোতের ন্যায় স্বর্গ হইতে নামিতে দেখিয়াছি; তিনি তাঁহার উপরে অবস্থিতি করিলেন।
33 আর আমি তাঁহাকে চিনিতাম না, কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তাইজ করিতে পাঠাইয়াছেন, তিনিই আমাকে বলিলেন, যাঁহার উপরে আত্মাকে নামিয়া অবস্থিতি করিতে দেখিবে, তিনিই সেই ব্যক্তি, যিনি পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করেন।
34 আর আমি দেখিয়াছি, সাক্ষ্য দিয়াছি যে, ইনিই ঈশ্বরের পুত্র।
35 পরদিন পুনরায় যোহন তাঁহার দুই জন শিষ্য দাঁড়াইয়া ছিলেন;
36 আর যীশু বেড়াইতেছিলেন, এমন সময়ে তিনি তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন, দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক।
37 সেই দুই শিষ্য তাঁহার এই কথা শুনিয়া যীশুর পশ্চাৎ গমন করিলেন।
38 তাহাতে যীশু ফিরিয়া তাঁহাদিগকে পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিতে দেখিয়া বলিলেন, কিসের অন্বেষণ করিতেছ? তাঁহারা কহিলেন, রব্বি—অনুবাদ করিলে ইহার অর্থ গুরু—আপনি কোথায় থাকেন?
39 তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, আইস, দেখিবে। অতএব তাঁহারা গিয়া, তিনি যেখানে থাকেন, দেখিলেন; এবং সেই দিন তাঁহার কাছে থাকিলেন; তখন বেলা অনুমান দশম ঘটিকা।
40 যোহনের কথা শুনিয়া যে দুই জন যীশুর পশ্চাৎ গমন করিয়াছিলেন, তাঁহাদের মধ্যে এক জন শিমোন পিতরের ভ্রাতা আন্দ্রিয়।
41 তিনি প্রথমে আপন ভ্রাতা শিমোনের দেখা পান, আর তাঁহাকে বলেন, আমরা মশীহের দেখা পাইয়াছি—অনুবাদ করিলে ইহার অর্থ খ্রীষ্ট অভিষিক্ত
42 তিনি তাঁহাকে যীশুর নিকটে আনিলেন। যীশু তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন, তুমি যোহনের পুত্র শিমোন, তোমাকে কৈফা বলা যাইবে, —অনুবাদ করিলে ইহার অর্থ পিতর পাথর
43 পরদিবস তিনি গালীলে যাইতে ইচ্ছা করিলেন, ফিলিপের দেখা পাইলেন। আর যীশু তাঁহাকে কহিলেন, আমার পশ্চাৎ আইস।
44 ফিলিপ বৈৎসৈদার লোক; আন্দ্রিয় পিতর সেই নগরের লোক।
45 ফিলিপ নথনেলের দেখা পাইলেন, আর তাঁহাকে কহিলেন, মোশি ব্যবস্থায় ভাববাদিগণ যাঁহার কথা লিখিয়াছেন, আমরা তাঁহার দেখা পাইয়াছি; তিনি নাসরতীয় যীশু, যোষেফের পুত্র।
46 নথনেল তাঁহাকে কহিলেন, নাসরৎ হইতে কি উত্তম কিছু উৎপন্ন হইতে পারে? ফিলিপ তাঁহাকে কহিলেন, আইস, দেখ।
47 যীশু নথনেলকে আপনার নিকটে আসিতে দেখিয়া তাঁহার বিষয়ে কহিলেন, দেখ, এক জন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যাহার অন্তরে ছল নাই।
48 নথনেল তাঁহাকে কহিলেন, আপনি কিসে আমাকে চিনিলেন? যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, ফিলিপ তোমাকে ডাকিবার পূর্ব্বে যখন তুমি সেই ডুমুরগাছের তলে ছিলে, তখন তোমাকে দেখিয়াছিলাম।
49 নথনেল তাঁহাকে উত্তর করিলেন, রব্বি, আপনিই ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই ইস্রায়েলের রাজা।
50 যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, আমি যে তোমাকে বলিলাম, সেই ডুমুরগাছের তলে তোমাকে দেখিয়াছিলাম, সেই জন্য কি বিশ্বাস করিলে? সকল হইতেও মহৎ মহৎ বিষয় দেখিবে।
51 আর তিনি তাঁহাকে কহিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা দেখিবে, স্বর্গ খুলিয়া গিয়াছে, এবং ঈশ্বরের দূতগণ মনুষ্যপুত্রের উপর দিয়া উঠিতেছেন নামিতেছেন।