Bible Versions
Bible Books

1 Kings 2 (IRVBN) Indian Revised Version - Bengali

1 দাউদের মৃত্যুর দিন কাছাকাছি আসলে, তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে এই সব নির্দেশ দিয়ে বললেন,
2 “পৃথিবীর সকলেই যে পথে যায় আমিও এখন সেই পথে যাচ্ছি। তাই তুমি শক্তিশালী হও, নিজেকে উপযুক্ত পুরুষ হিসাবে দেখাও।
3 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ মত তুমি তাঁর পথে চলবে এবং মোশির ব্যবস্থায় লেখা সদাপ্রভুর সব নিয়ম, তাঁর আদেশ, তাঁর নির্দেশ তাঁর দাবি মেনে চলবে। এতে তুমি যা কিছু কর না কেন এবং যেখানেই যাও না কেন সফল হতে পারবে।
4 যেন সদাপ্রভু যে বিষয় আমার কাছে বলেছেন তা পূরণ করতে পারেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি তোমার সন্তানেরা সমস্ত হৃদয়ে সমস্ত প্রাণ দিয়ে বিশ্বস্তভাবে আমার সামনে চলাফেরা করবার জন্য সাবধানে জীবন কাটায় তবে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না।’
5 সরূয়ার ছেলে যোয়াব আমার প্রতি যা করেছে এবং ইস্রায়েলীয় সৈন্যদলের দুই সেনাপতির প্রতি, অর্থাৎ নেরের ছেলে অব্‌নের যেথরের ছেলে অমাসার প্রতি যা করেছে তা তো তুমি জান। সে তাদের খুন করেছে, শান্তির দিনের যুদ্ধের দিনের মত করে সে তাদের রক্তপাত করেছে আর সেই রক্ত তাঁর কোমর বন্ধনীতে পায়ের জুতোতে লেগেছে।
6 তুমি তার সঙ্গে বুদ্ধি করে চলবে, তবে বুড়ো বয়সে তুমি তাকে শান্তিতে মৃতস্থানে যেতে দেবে না।
7 কিন্তু গিলিয়দের বর্সিল্লয়ের ছেলেদের প্রতি বিশ্বস্ত থেকো। তোমার টেবিলে যারা তোমার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে তাদের মধ্যে তুমি তাদেরও জায়গা দিয়ো। তোমার ভাই অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার দিন তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।
8 মনে রেখো, বহুরীমের বিন্যামীনীয়ের গেরার ছেলে শিমিয়ি তোমার সঙ্গে আছে। আমি যেদিন মহনয়িমে যাই সেই দিন সে আমাকে ভীষণ অভিশাপ দিয়েছিল। যর্দনে সে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসলে পর আমি সদাপ্রভুর নামে তার কাছে শপথ করেছিলাম যে, আমি তাকে মেরে ফেলব না।
9 কিন্তু এখন তুমি তাকে নির্দোষ বলে মনে কোরো না। তুমি বুদ্ধিমান; তার প্রতি তুমি কি করবে তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। তার বুড়ো বয়সে রক্তপাতের মধ্য দিয়েই তাকে মৃতস্থানে পাঠিয়ে দেবে।”
10 এর পর দায়ূদ তাঁর পূর্বপুরুষদের ন্যায় চির নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে দায়ূদ শহরে কবর দেওয়া হল।
11 তিনি ইস্রায়েলের উপরে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন সাত বছর হিব্রোণে আর তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে।
12 পরে শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের সিংহাসনে বসলেন এবং তাঁর রাজত্ব শক্তভাবে স্থাপিত হল। শলোমনের রাজত্ব শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হল।
13 পরে হগীতের ছেলে আদোনিয় শলোমনের মা বৎশেবার কাছে গেল।
14 বৎশেবা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ভাল মন নিয়ে এসেছ?” সে বলল, “হ্যাঁ, ভাল মন নিয়েই এসেছি। আপনাকে আমার কিছু বলবার আছে।” বৎশেবা বললেন, “বল।”
15 তখন সে বলল, “আপনি তো জানেন রাজ্যটা আমারই ছিল। সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা আশা করেছিল আমি রাজা হব। কিন্তু অবস্থাটা বদলে গিয়ে রাজ্যটা আমার ভাইয়ের হাতে গেছে, কারণ এটা সদাপ্রভুর কাছ থেকেই সে পেয়েছে।
16 এখন আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে। আপনি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।” তিনি বললেন, “বল।”
17 সে তখন বলতে লাগল, “আপনি রাজা শলোমনকে বলুন যেন তিনি শূনেমীয়া অবীশগকে আমার সঙ্গে বিয়ে দেন। তিনি আপনার কথা ফেলবেন না।”
18 উত্তরে বৎশেবা বললেন, “বেশ ভাল, আমি তোমার কথা রাজাকে বলব।”
19 বৎশেবা যখন আদোনিয়ের কথা বলবার জন্য রাজা শলোমনের কাছে গেলেন তখন রাজা উঠে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং তারপর তাঁর সিংহাসনে বসলেন। রাজা তাঁর মায়ের জন্য একটা আসন আনিয়ে তাঁর ডান পাশে রাখলেন এবং তাঁর মা সেখানে বসলেন।
20 বৎশেবা বললেন, “আমি তোমাকে একটা ছোট্ট অনুরোধ করব; তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না।” উত্তরে রাজা বললেন, “বল মা, আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব না।”
21 বৎশেবা তখন বললেন, “তোমার ভাই আদোনিয়ের সঙ্গে শূনেমীয়া অবীশগের বিয়ে দেওয়া হোক।”
22 উত্তরে রাজা শলোমন তাঁর মাকে বললেন, “আদোনিয়ের জন্য কেন তুমি শূনেমীয়া অবীশগকে চাইছ? তুমি তার জন্য রাজ্যটাও তো চাইতে পারতে, কারণ সে আমার বড় ভাই; হ্যাঁ, তার জন্য, যাজক অবিয়াথরের জন্য আর সরূয়ার ছেলে যোয়াবের জন্যও তা চাইতে পারতে।”
23 এর পর রাজা শলোমন সদাপ্রভুর নামে শপথ করে বললেন, “এই অনুরোধের জন্য যদি আদোনিয়ের প্রাণ নেওয়া না হয় তবে সদাপ্রভু যেন আমাকে শাস্তি দেন, আর তা ভীষণভাবেই দেন।
24 যিনি আমার বাবা দায়ূদের সিংহাসনে আমাকে শক্তভাবে স্থাপিত করেছেন এবং তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমার জন্য একটা রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি দিয়ে বলছি, আজই আদোনিয়কে মেরে ফেলা হবে।”
25 তারপর রাজা শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে হুকুম দিলেন, আর বনায় আদোনিয়কে মেরে ফেললেন।
26 পরে রাজা যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “আপনি অনাথোতে নিজের জায়গায় ফিরে যান। আপনি মৃত্যুর যোগ্য, কিন্তু এখন আমি আপনাকে মেরে ফেলব না, কারণ আপনি আমার বাবা দায়ূদের দিনের প্রভু সদাপ্রভুর সিন্দুকটা বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং আমার বাবার সমস্ত দুঃখ কষ্টের ভাগী হয়েছিলেন।”
27 এই ভাবে শলোমন অবিয়াথরকে সদাপ্রভুর যাজক পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। সদাপ্রভু শীলোতে এলির বংশ সম্বন্ধে যা বলেছিলেন তাঁর সেই কথা এই ভাবে পূর্ণ হল।
28 এই সব খবর যোয়াবের কানে গেল। তিনি অবশালোমের পক্ষে না গেলেও আদোনিয়ের পক্ষে গিয়েছিলেন, তাই তিনি পালিয়ে সদাপ্রভুর তাঁবুতে গিয়ে বেদির শিং ধরে থাকলেন।
29 রাজা শলোমনকে বলা হল যে, যোয়াব পালিয়ে সদাপ্রভুর তাঁবুতে গেছেন এবং বেদির কাছে আছেন। তখন শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এই আদেশ দিলেন, “আপনি গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলুন।”
30 কাজেই বনায় সদাপ্রভুর তাঁবুতে ঢুকে যোয়াবকে বললেন, “রাজা আপনাকে বের হয়ে আসতে বলেছেন।” কিন্তু যোয়াব বললেন, “না, আমি এখানেই মরব।” বনায় রাজাকে সেই খবর জানিয়ে বললেন, “যোয়াব আমাকে এই উত্তর দিয়েছেন।”
31 তখন রাজা বনায়কে এই হুকুম দিলেন, “তিনি যা বলেছেন তাই করুন। তাঁকে মেরে ফেলে কবর দিয়ে দিন। যোয়াব যে নির্দোষ লোকদের রক্তপাত করেছেন তার দোষ আপনি আমার আমার বাবার বংশ থেকে এই ভাবে দূর করে দিন।
32 যে রক্তপাত তিনি করেছেন তার শোধ সদাপ্রভু নেবেন, কারণ আমার বাবা দায়ূদের অজান্তে তিনি দুইজন লোককে আক্রমণ করে মেরে ফেলেছিলেন। তাঁরা হলেন ইস্রায়েলের সৈন্যদলের সেনাপতি নেরের ছেলে অব্‌নের আর যিহূদার সৈন্যদলের সেনাপতি যেথরের ছেলে অমাসা। এই দুইজন ছিলেন তাঁর চেয়ে আরও ধার্মিক এবং আরও ভাল লোক।
33 তাঁদের রক্তপাতের দোষ যোয়াবের তাঁর বংশের লোকদের মাথার উপরে চিরকাল থাকুক। কিন্তু দায়ূদ তাঁর বংশের লোকদের উপর এবং তাঁর পরিবার তাঁর সিংহাসনের উপর সদাপ্রভুর শান্তি চিরকাল থাকুক।”
34 তখন যিহোয়াদার ছেলে বনায় গিয়ে যোয়াবকে মেরে ফেললেন। তাঁকে মরু এলাকায় তাঁর নিজের বাড়িতে কবর দেওয়া হল।
35 রাজা তখন যোয়াবের জায়গায় যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে সেনাপতি হিসাবে নিযুক্ত করলেন এবং অবিয়াথরের জায়গায় বসালেন যাজক সাদোককে।
36 তারপর রাজা লোক পাঠিয়ে শিমিয়িকে ডেকে এনে বললেন, “তুমি যিরূশালেমে একটা বাড়ি তৈরী করে সেখানেই থাকবে, অন্য কোথাও তোমার যাওয়া চলবে না।
37 যেদিন তুমি সেখান থেকে বের হয়ে কিদ্রোণ উপত্যকা পার হবে সেই দিন তুমি নিশ্চয় করে জেনে রেখো যে, তোমাকে মরতেই হবে; তোমার রক্তপাতের দোষ তোমার নিজের মাথার উপরেই পড়বে।”
38 উত্তরে শিমিয়ি রাজাকে বললেন, “আপনি ভালই বলেছেন। আমার মনিব মহারাজ যা বললেন আপনার দাস তাই করবে।” এর পর শিমিয়ি অনেক দিন যিরূশালেমে থাকল।
39 কিন্তু তিন বছর পরে শিমিয়ির দুইজন দাস মাখার ছেলে গাতের রাজা আখীশের কাছে পালিয়ে গেল। শিমিয়িকে বলা হল যে, তার দাসেরা গাতে আছে।
40 তখন শিমিয়ি তার গাধার উপর গদি চাপিয়ে তার দাসদের খোঁজে গাতে আখীশের কাছে গেল এবং সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনল।
41 পরে শলোমনকে জানানো হল যে, শিমিয়ি যিরূশালেম থেকে গাতে গিয়ে আবার ফিরে এসেছে।
42 রাজা তখন শিমিয়িকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “আমি কি সদাপ্রভুর নামে তোমাকে শপথ করিয়ে সাক্ষ্য দিই নি যে, যেদিন তুমি বেরিয়ে বাইরে দূরে কোথাও যাবে সেই দিন তোমাকে নিশ্চয়ই মরতে হবে? সেই দিন তুমি আমাকে বলেছিলে, যেটা বলেছিলে সেটা ভালো।
43 তাহলে কেন তুমি সদাপ্রভুর কাছে করা দিব্যি আমার আদেশ পালন কর নি?”
44 শলোমন শিমিয়িকে আরও বললেন, “আমার বাবা দায়ূদের প্রতি তুমি যে সব অন্যায় করেছ তা তো তোমার অন্তর জানে। এখন সদাপ্রভুই তোমাকে তোমার অন্যায় কাজের প্রতিফল দেবেন।
45 কিন্তু রাজা শলোমনের উপরে আশীর্বাদ থাকবে, আর দায়ূদের সিংহাসন সদাপ্রভুর সামনে চিরকাল অটল থাকবে।”
46 এর পর রাজা যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে হুকুম দিলেন আর বনায় গিয়ে শিমিয়িকে মেরে ফেললেন। এই ভাবে শলোমনের হাতে রাজ্যটা ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হল। PE
Copy Rights © 2023: biblelanguage.in; This is the Non-Profitable Bible Word analytical Website, Mainly for the Indian Languages. :: About Us .::. Contact Us
×

Alert

×